04 December 2016

পছন্দের প্রার্থি নিয়োগ না হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা

পছন্দের প্রার্থীকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিতে রাজি না হওয়ায় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কুড়িপাড়া কলেজে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এ কারণে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম ও এইচএসসির নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শনিবার সকালে কলেজের ছাত্রছাত্রীরা মিছিল ও মানববন্ধন করেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, কুড়িপাড়া কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। গত ২০ নভেম্বর এ জন্য নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
কুড়িপাড়া কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রবিউল করিম বলেন, মেধার ভিত্তিতেই অধ্যক্ষ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু স্থানীয় রতনকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তাদির হোসেন বকুল ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা খোকন তাঁদের পছন্দের প্রার্থী কামরুজ্জামানকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বারবার চাপ সৃষ্টি করেন। এ কারণেই নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত রাখা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মুক্তাদির হোসেন স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে গত ২১ নভেম্বর কলেজে এইচএসসি টেস্ট পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরই একপর্যায়ে গত ২৬ নভেম্বর কলেজের প্রতিটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। বিষয়টি কলেজের পক্ষ থেকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাজুড়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কলেজ খুলে দেওয়ার দাবিতে আজ সকালে কলেজ চত্বরে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছেন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তাদির হোসেন বলেন, ‘২০ নভেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করায় এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়েছে। বিষয়টি আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় (স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে) অবগত রয়েছেন। ক্ষুব্ধ লোকজন কলেজে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। তবে আমি এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলাম। এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে দু-একদিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
পছন্দের প্রার্থীকে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিতে চাপ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন মুক্তাদির।
কুড়িপাড়া কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গাজী মো. আজাহার আলী বলেন, ‘এটি মানুষ গড়ার কারখানা। এখানে বিরোধ থাকা ঠিক না। আমরা চেয়েছিলাম যে কলেজটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পরে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। কিন্তু এর মধ্যেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য বারবার চাপ সৃষ্টি করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের একাধিক বৈঠকও হয়েছে।’ কলেজের জন্য যা ভালো সেই সিদ্ধান্তটাই আসবে বলে তিনি আশা করেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফীউল্লাহ বলেন, ‘কলেজ বন্ধ ও কলেজ খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। আজ অফিস বন্ধ থাকায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। আগামীকাল রোববার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
ফেইসবুকে আমাদের পেতে এখানে ক্লিক করুন

0 comments:

Post a Comment